সন্তান লালন-পালনে পিতা-মাতার করণীয়
সন্তান লালন-পালনে পিতা-মাতার করণীয় প্রতিটি মানুষই বিবাহিত জীবনে প্রবেশের পর সন্তান কামনা করেন। অধিকাংশ দম্পতিই হন সন্তানের গর্বিত পিতা-মাতা। কিন্তু মনে রাখতে হবে শুধু সন্তান জন্ম দিয়ে পিতা-মাতা হওয়াই যথেষ্ট নয়। সবাইকে হতে হবে দায়িত্বশীল পিতা বা মাতা। অন্যথায় দুনিয়াতে যেমন রয়েছে ভোগান্তি, আখিরাতেও রয়েছে তেমনি অশান্তি এবং অপেক্ষমান নিচ্ছিদ্র জবাবদিহিতা। কারণ, সন্তান হলো পিতা-মাতার কাছে প্রদত্ত আল্লাহর আমানত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ. الإِمَامُ رَاعٍ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ, وَالرَّجُلُ رَاعٍ فِي أَهْلِهِ وَهْوَ مَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ, وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ فِي بَيْتِ زَوْجِهَا وَمَسْؤُولَةٌ عَنْ رَعِيَّتِهَا وَالْخَادِمُ رَاعٍ فِي مَالِ سَيِّدِهِ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ وَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ». ‘তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল আর সবাই তোমরা জিজ্ঞাসিত হবে নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে। ইমাম একজন দায়িত্বশীল; তিনি তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন। পুরুষ দায়িত্বশীল তার পরিবারের; সে জিজ্ঞাসিত হবে তার দায়িত্ব সম্পর্কে। মহিলা দায়িত্বশীল তার স্বামীর গৃহের (তার সম্পদ ও সন্তানের); সে জিজ্ঞাসিত হবে তার দায়িত্ব সম্পর্কে। ভৃত্যও একজন দায়িত্বশীল, সে জিজ্ঞাসিত হবে তার মুনিবের সম্পদ সম্পর্কে। (এককথায়) তোমরা সবাই দায়িত্বশীল আর সবাই জিজ্ঞাসিত হবে সে দায়িত্ব সম্পর্কে।’ [সহীহ বুখারী : ৭১৩৮; তিরমিযী : ১৭০৫]
অনেক পিতা-মাতাই হয়তো বলবেন, কে বলেছে আমরা নিজ সন্তানের ব্যাপারে দায়িত্ববান নই, ছেলে-মেয়েদের প্রতি নিজ কর্তব্য সম্পর্কে সজাগ ও সতর্ক নই? উত্তরে বলা হবে, আমরা বেখবর নই বটে। তবে যথাযথ দায়িত্ববান নই আমরা। আরও বাস্তব কথা হলো, আমরা নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে পূর্ণ ওয়াকিফহাল নই। কেউ হয়তো প্রিয় এই সন্তানদের স্রষ্টা আল্লাহর হুকুম মতো জীবন পরিচালনাই করি না আর যারা করি, তারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে অবগতই নই। তাই দেখা যায়, আমরা শুধু সন্তানের দৈহিক চাহিদার তত্ত্বাবধান করি। তার আত্মিক চাহিদার প্রতি কোনো ভ্রুক্ষেপ করি না। অথচ এর গুরুত্ব প্রথমোক্তটির চেয়ে বেশি বৈ কম নয়। দৈহিক চাহিদাকে পরিতৃপ্তি দিতে পারে কেবল আত্মা। পক্ষান্তরে দৈহিক চাহিদার অপূর্ণতা সত্ত্বেও আত্মা পারে সুখী হতে। ইসলাম তাই শিশুর উভয় চাহিদার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। পিতা-মাতাকে উভয় দিক তত্ত্বাবধান করতে নির্দেশ ও নির্দেশনা দিয়েছে। সন্তানকে আত্মিকভাবে ঋব্ধ ও ঔশ্বর্যমণ্ডিত করার ইঙ্গিত পাই আমরা আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশে।
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ قُوٓاْ أَنفُسَكُمۡ وَأَهۡلِيكُمۡ نَارٗا وَقُودُهَا ٱلنَّاسُ وَٱلۡحِجَارَةُ﴾ [التحريم : 6] ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে আগুন হতে বাঁচাও, যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর।’ {সূরা আত-তাহরীম, আয়াত : ০৬} এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, ‘অর্থাৎ, তাদেরকে আদব শিক্ষা দাও এবং ইলম শেখাও।’ [তাফসীর ইবন কাসীর, উল্লেখিত আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য]
এদিকে বৈষয়িক শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে ধর্মীয় তথা নৈতিক শিক্ষাদানের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «مُرُوا أَوْلاَدَكُمْ بِالصَّلاَةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرِ سِنِينَ وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِى الْمَضَاجِعِ». ‘তোমাদের সন্তানদের সাত বছর হলে তাদের সালাতের নির্দেশ দাও, তাদের বয়স দশ বছর হলে এ জন্য তাদের প্রহার করো এবং তাদের পরস্পরে বিছানা পৃথক করে দাও।’ [আবূ দাউদ : ৪৯৫; মুসনাদ আহমদ : ৬৬৮৯]
প্রখ্যাত দার্শনিক ইমাম গাজালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, اعلم أن الطريق في رياضة الصبيان من أهم الأمور وأوكدها، والصبي أمانة عند والديه، وقلبه الطاهر جوهرة نفيسة خالية عن كل نقش وصورة، وهو قابل لكل مانقش ومائل إلى كل مايمال إليه، فإن عوِد الخير وعلمه نشأ عليه وسعد في الدنيا والآخرة، وشاركه في ثوابه أبوه وكل معلمٍ له ومؤدب، وإن عوِد الشر وأهمل إهمال البهائم شقى وهلك وكان الوزر في رقبة القيِم عليه والوالي له،.. ‘জেনে রাখ, শিশু প্রতিপালন পদ্ধতি একটি অতি গুরত্বপূর্ণ বিষয়। আর সন্তান তার পিতা-মাতার কাছে আমানত স্বরূপ। তার পবিত্র অন্তর অমূল্য মাণিক্য, যে কোনো নকশা বা ছবি থেকে যা মুক্ত। ফলে তা যে কোনো নকশা গ্রহণে প্রস্তুত এবং তাকে যার প্রতিই ধাবিত করা হবে সে দিকেই সে ধাবিত হয়। তাই তাকে ভালোয় অভ্যস্ত করা হলে, সুশিক্ষায় প্রতিপালন করলে, সেভাবেই সে গড়ে উঠবে। ইহকালে ও পরকালে সে সুখী হবে। তার নেকীতে তার পিতা-মাতা এবং তার প্রত্যেক শিক্ষক ও শিষ্টাচারদানকারীই অংশীদার হবেন। পক্ষান্তরে তাকে খারাপে অভ্যস্ত করা হলে, তাকে পশুর ন্যায় অবহেলা করা হলে, সে হবে হতভাগ্য ও ধ্বংসপ্রাপ্ত। আর এর দায় বর্তাবে তার কর্তা ও অভিভাবকের ওপর।’ [ইহয়াউ উলুমিদ্দীন : ৩/৬২]
সন্তানকে রক্ষা করার উপায় হলো, তার পিতা-মাতা তাকে শিষ্টাচার সম্পন্ন, সভ্য ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী বানাবে এবং তাকে অসৎ সঙ্গ থেকে বিরত রাখবে। তার মাঝে বুদ্ধির উন্মেষ লক্ষ্য করা মাত্র উত্তমরূপে তাকে পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান করতে শুরু করবে। বুদ্ধির এ উন্মেষের সূচনা লাজুকতার প্রাথমিক প্রকাশের মাধ্যমে। কারণ, যখন সে লজ্জা পায়, সলাজ হয় এবং কোনো কিছু বর্জন করে, তা কেবল তার ওপর জ্ঞানের আলো পড়ার কারণেই করে। আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে এটি তার জন্য একটি উপহার এবং সুসংবাদতুল্য, যা স্বভাবের সুস্থতা ও হৃদয়ের স্বচ্ছতা প্রমাণ করে। এটি পরিণত বয়সে তার বুদ্ধির পূর্ণতারও ইঙ্গিত প্রদান করে।
সুতরাং শিশুর লাজুকতাকে উপেক্ষা করা সমীচীন নয়। বরং তাকে সুশিক্ষিত ও মার্জিতভাবে গড়ে তুলতে এ লাজুকতা ও বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগানো উচিত। প্রতিপালনের প্রাথমিক অবস্থায় যদি শিশুর প্রতি অযত্ন ও অনাদর দেখানো হয়, তবে প্রায় ক্ষে
সন্তান লালন-পালনে পিতা-মাতার করণীয় প্রতিটি মানুষই বিবাহিত জীবনে প্রবেশের পর সন্তান কামনা করেন। অধিকাংশ দম্পতিই হন সন্তানের গর্বিত পিতা-মাতা। কিন্তু মনে রাখতে হবে শুধু সন্তান জন্ম দিয়ে পিতা-মাতা হওয়াই যথেষ্ট নয়। সবাইকে হতে হবে দায়িত্বশীল পিতা বা মাতা। অন্যথায় দুনিয়াতে যেমন রয়েছে ভোগান্তি, আখিরাতেও রয়েছে তেমনি অশান্তি এবং অপেক্ষমান নিচ্ছিদ্র জবাবদিহিতা। কারণ, সন্তান হলো পিতা-মাতার কাছে প্রদত্ত আল্লাহর আমানত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ. الإِمَامُ رَاعٍ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ, وَالرَّجُلُ رَاعٍ فِي أَهْلِهِ وَهْوَ مَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ, وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ فِي بَيْتِ زَوْجِهَا وَمَسْؤُولَةٌ عَنْ رَعِيَّتِهَا وَالْخَادِمُ رَاعٍ فِي مَالِ سَيِّدِهِ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ وَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ». ‘তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল আর সবাই তোমরা জিজ্ঞাসিত হবে নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে। ইমাম একজন দায়িত্বশীল; তিনি তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন। পুরুষ দায়িত্বশীল তার পরিবারের; সে জিজ্ঞাসিত হবে তার দায়িত্ব সম্পর্কে। মহিলা দায়িত্বশীল তার স্বামীর গৃহের (তার সম্পদ ও সন্তানের); সে জিজ্ঞাসিত হবে তার দায়িত্ব সম্পর্কে। ভৃত্যও একজন দায়িত্বশীল, সে জিজ্ঞাসিত হবে তার মুনিবের সম্পদ সম্পর্কে। (এককথায়) তোমরা সবাই দায়িত্বশীল আর সবাই জিজ্ঞাসিত হবে সে দায়িত্ব সম্পর্কে।’ [সহীহ বুখারী : ৭১৩৮; তিরমিযী : ১৭০৫]
অনেক পিতা-মাতাই হয়তো বলবেন, কে বলেছে আমরা নিজ সন্তানের ব্যাপারে দায়িত্ববান নই, ছেলে-মেয়েদের প্রতি নিজ কর্তব্য সম্পর্কে সজাগ ও সতর্ক নই? উত্তরে বলা হবে, আমরা বেখবর নই বটে। তবে যথাযথ দায়িত্ববান নই আমরা। আরও বাস্তব কথা হলো, আমরা নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে পূর্ণ ওয়াকিফহাল নই। কেউ হয়তো প্রিয় এই সন্তানদের স্রষ্টা আল্লাহর হুকুম মতো জীবন পরিচালনাই করি না আর যারা করি, তারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে অবগতই নই। তাই দেখা যায়, আমরা শুধু সন্তানের দৈহিক চাহিদার তত্ত্বাবধান করি। তার আত্মিক চাহিদার প্রতি কোনো ভ্রুক্ষেপ করি না। অথচ এর গুরুত্ব প্রথমোক্তটির চেয়ে বেশি বৈ কম নয়। দৈহিক চাহিদাকে পরিতৃপ্তি দিতে পারে কেবল আত্মা। পক্ষান্তরে দৈহিক চাহিদার অপূর্ণতা সত্ত্বেও আত্মা পারে সুখী হতে। ইসলাম তাই শিশুর উভয় চাহিদার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। পিতা-মাতাকে উভয় দিক তত্ত্বাবধান করতে নির্দেশ ও নির্দেশনা দিয়েছে। সন্তানকে আত্মিকভাবে ঋব্ধ ও ঔশ্বর্যমণ্ডিত করার ইঙ্গিত পাই আমরা আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশে।
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ قُوٓاْ أَنفُسَكُمۡ وَأَهۡلِيكُمۡ نَارٗا وَقُودُهَا ٱلنَّاسُ وَٱلۡحِجَارَةُ﴾ [التحريم : 6] ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে আগুন হতে বাঁচাও, যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর।’ {সূরা আত-তাহরীম, আয়াত : ০৬} এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, ‘অর্থাৎ, তাদেরকে আদব শিক্ষা দাও এবং ইলম শেখাও।’ [তাফসীর ইবন কাসীর, উল্লেখিত আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য]
এদিকে বৈষয়িক শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে ধর্মীয় তথা নৈতিক শিক্ষাদানের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «مُرُوا أَوْلاَدَكُمْ بِالصَّلاَةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرِ سِنِينَ وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِى الْمَضَاجِعِ». ‘তোমাদের সন্তানদের সাত বছর হলে তাদের সালাতের নির্দেশ দাও, তাদের বয়স দশ বছর হলে এ জন্য তাদের প্রহার করো এবং তাদের পরস্পরে বিছানা পৃথক করে দাও।’ [আবূ দাউদ : ৪৯৫; মুসনাদ আহমদ : ৬৬৮৯]
প্রখ্যাত দার্শনিক ইমাম গাজালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, اعلم أن الطريق في رياضة الصبيان من أهم الأمور وأوكدها، والصبي أمانة عند والديه، وقلبه الطاهر جوهرة نفيسة خالية عن كل نقش وصورة، وهو قابل لكل مانقش ومائل إلى كل مايمال إليه، فإن عوِد الخير وعلمه نشأ عليه وسعد في الدنيا والآخرة، وشاركه في ثوابه أبوه وكل معلمٍ له ومؤدب، وإن عوِد الشر وأهمل إهمال البهائم شقى وهلك وكان الوزر في رقبة القيِم عليه والوالي له،.. ‘জেনে রাখ, শিশু প্রতিপালন পদ্ধতি একটি অতি গুরত্বপূর্ণ বিষয়। আর সন্তান তার পিতা-মাতার কাছে আমানত স্বরূপ। তার পবিত্র অন্তর অমূল্য মাণিক্য, যে কোনো নকশা বা ছবি থেকে যা মুক্ত। ফলে তা যে কোনো নকশা গ্রহণে প্রস্তুত এবং তাকে যার প্রতিই ধাবিত করা হবে সে দিকেই সে ধাবিত হয়। তাই তাকে ভালোয় অভ্যস্ত করা হলে, সুশিক্ষায় প্রতিপালন করলে, সেভাবেই সে গড়ে উঠবে। ইহকালে ও পরকালে সে সুখী হবে। তার নেকীতে তার পিতা-মাতা এবং তার প্রত্যেক শিক্ষক ও শিষ্টাচারদানকারীই অংশীদার হবেন। পক্ষান্তরে তাকে খারাপে অভ্যস্ত করা হলে, তাকে পশুর ন্যায় অবহেলা করা হলে, সে হবে হতভাগ্য ও ধ্বংসপ্রাপ্ত। আর এর দায় বর্তাবে তার কর্তা ও অভিভাবকের ওপর।’ [ইহয়াউ উলুমিদ্দীন : ৩/৬২]
সন্তানকে রক্ষা করার উপায় হলো, তার পিতা-মাতা তাকে শিষ্টাচার সম্পন্ন, সভ্য ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী বানাবে এবং তাকে অসৎ সঙ্গ থেকে বিরত রাখবে। তার মাঝে বুদ্ধির উন্মেষ লক্ষ্য করা মাত্র উত্তমরূপে তাকে পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান করতে শুরু করবে। বুদ্ধির এ উন্মেষের সূচনা লাজুকতার প্রাথমিক প্রকাশের মাধ্যমে। কারণ, যখন সে লজ্জা পায়, সলাজ হয় এবং কোনো কিছু বর্জন করে, তা কেবল তার ওপর জ্ঞানের আলো পড়ার কারণেই করে। আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে এটি তার জন্য একটি উপহার এবং সুসংবাদতুল্য, যা স্বভাবের সুস্থতা ও হৃদয়ের স্বচ্ছতা প্রমাণ করে। এটি পরিণত বয়সে তার বুদ্ধির পূর্ণতারও ইঙ্গিত প্রদান করে।
সুতরাং শিশুর লাজুকতাকে উপেক্ষা করা সমীচীন নয়। বরং তাকে সুশিক্ষিত ও মার্জিতভাবে গড়ে তুলতে এ লাজুকতা ও বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগানো উচিত। প্রতিপালনের প্রাথমিক অবস্থায় যদি শিশুর প্রতি অযত্ন ও অনাদর দেখানো হয়, তবে প্রায় ক্ষে
No comments:
Post a Comment
ভাল একটি মন্তব্য করার জন্য শুকরিয়া